Image Not Available
Vision and Mission

     কাস্টম গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর, নামকরণের মাঝেই প্রতিফলিত হচ্ছে এর কার্যক্রমের স্বরুপ। দি কাস্টমস এ্যাক্ট, ১৯৬৯ দ্বারা বিশেষভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত একটি বিশেষায়িত দপ্তর। কাস্টমস  সংক্রান্ত যাবতীয় অপরাধ ও অপতৎপরতার, মুলোৎপাটন এর মূল লক্ষ্য। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অধীনে গোয়েন্দা অনুসন্ধান ও তদন্ত কার্যক্রমে এর মাঠতৎপরতা বেশ লক্ষনীয়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে দপ্তরের মিশন, ভিশন ও কার্যক্রমে বেশ কিছু স্ট্র্যাটেজিক পরিবর্তন ও পরিবর্ধনের ফলে আরও আধুনিক, যুগোপযোগী ও সুসংহতভাবে মাঠকার্যক্রম পরিচালনা করছে কাস্টমস গোয়েন্দা।

      সময় পাল্টেছে, সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে অপরাধপ্রবণতা, অপরাধের নিত্যনতুন অভিনব কৌশল ও অপরাধের জঠিলতা। ব্যবসা ও মুনাফার সাথে সরাসরি সংশ্লিষ্টতা থাকার কারণে কাস্টমস অধিক্ষেত্রে এর ব্যাপকতা ও বিচিত্রতা আরও বিশেষভাবে লক্ষ্যনীয়। আর তাই কেবল মাত্র শুল্ক ফাঁকির কলাকৌশল ও এই সংক্রান্ত ইনফরমেশনের পেছনে অবিরাম শ্রম ও সময় ব্যয় না করে কাস্টমস গোয়েন্দার মনোযোগ ও দৃষ্টি এখন নতুন নতুন ডাইমেনশনের দিকে।

     এক্ষেত্রে, ইনফরমেশনের উপর সরাসরি ভিত্তি না করে ইনফরমেশনকে নিয়ে গবেষণা করে, বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ ও সন্নিবেশন করে ইনফরমেশনকে ইনটিলিজেন্সে রুপান্তর করা হয়। ব্যাপারটি অনেকটা ছকের পরে ছক মিলিয়ে ধাঁধার উত্তর বের করার মত। ট্রেড ফ্যাসিলিটেশনের স্বার্থে এই ধাঁধা মেলানোর পরিশ্রমটুকু করতেই হয়, কারণ তথ্য (Information) যতক্ষন গোয়েন্দা তথ্যে (Intelligence) এ রুপান্তরিত না হচ্ছে ততক্ষন পর্যন্ত কেবল তথ্যের উপর ভিত্তি করে মাঠে নামলে একজন অপরাধী বা তার অপরাধকে সনাক্ত করার অজুহাতে আরও অসংখ্য নিরপরাধ ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। এতে টেডফ্রেন্ডলি বা ব্যবসা বান্ধব পরিবেশ বজায় থাকেনা ও ব্যবসার স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যহত হয়।

     কিন্তু, বাংলাদেশ কাস্টমসের মুল উদ্দেশ্য ট্রেড ফ্যাসিলিটেশনের মাধ্যমে দেশের শিল্প ও বাণিজ্যের উত্তরোত্তর প্রসার ঘটানো। আর তাই শুল্ক ফাঁকি ও চোরাচালানের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতি ও স্থানীয় বাজারের স্থিতিশীলতা বিনষ্টকারী ব্যবসায়ীগণ, যারা কাস্টমসের প্রচলিত আইন মেনে ব্যবসা করছেন না তাদের নিবৃত্ত করতে আইনানুযায়ী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহনের জন্য কাস্টমস গোয়েন্দাকে অর্পণ করা হয়েছে বিশেষায়িত ক্ষমতা। এখানেই কাস্টমস গোয়েন্দা সম্পূর্ন নতুন আঙ্গিকে ঢেলে সাজিয়েছে তার মুল কার্যক্রমকে। ট্রেড ফ্যাসিলিটেশনকে যথাসম্ভব নিশ্চিত করতে ও ব্যবসার ক্ষেত্রে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর অত্যন্ত সচেষ্ট। সাধারন তথ্যকে গোয়েন্দা তথ্যে রুপান্তরকরণ তাই প্রথম শর্ত। তারপর তা কেন্দ্র করেই পরিচালিত হয় পরবর্তী তদন্ত কার্যক্রম।

    কেবলমাত্র, শুল্ক ফাঁকি রোধ ও প্রতিরোধই নয়, স্বর্ণ, মুদ্রা, মাদক ও নেশা জাতীয় দ্রব্য সহ যেকোন প্রকারের চোরাচালান প্রতিরোধের জন্য গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের জন্য চোরাচালান প্রতিরোধকে অন্যতম দায়িত্ব হিসেবে অর্পণ করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড অনুমোদিত Charter of Duties প্রকাশিত হতে যাচ্ছে।

   এ সকল যাবতীয় দেশাভ্যন্তরীণ দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি আর্ন্তজাতিক পরিমন্ডলেও কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর গুরত্বপূর্ন ভুমিকা ও অবদান রেখে চলেছে। National Contact Point হিসেবে আর্ন্তজাতিকভাবে গোপন সংবাদ গ্রহন ও প্রেরণের মাধ্যমরুপে এই অধিদপ্তরকে অর্পণ করা হয়েছে বিশেষ দায়িত্ব। অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে বিভিন্ন দেশ ও আর্ন্তজাতিক বিভিন্ন সংস্থার সাথে লিয়াঁজো রক্ষা করে বাংলাদেশ কাস্টমসের ইতিবাচক ভাবমূর্তিকে আর্ন্তজাতিক কাস্টমস পরিমন্ডলে উপস্থাপনের গুরুভার বেশ দক্ষতার সাথে এই অধিদপ্তর বহন করে চলছে।

 অধিদপ্তরের মুল কার্যক্রমগুলো হচ্ছে

১। চোরাচালান এবং অন্যান্য কাস্টমস অপরাধ ও জালিয়াতি প্রতিরোধ; আইন ভঙ্গের পণ্য আটক; বাণিজ্যিক জালিয়াতি, বাণিজ্য সংক্রান্ত মানিলন্ডারিং এবং অন্যান্য কাস্টমস আইন লংঘন এর ক্ষেত্রে তদন্ত পরিচালনা;

২। মাদক ও নেশা জাতীয় দ্রব্য, জাল, মুদ্রা, আইপিআর সংক্রান্ত পণ্য, প্রতœতাত্ত্বিক পণ্য, মানবদেহের জন্য ক্ষতিকারক পণ্য, অস্ত্র, বিস্ফোরক পণ্য পাচার রোধ এবং চোরাচালান সংক্রান্ত তথ্য সংরক্ষণ ও প্রোফাইলিং; তথ্য আদান-প্রদান এবং পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে জাতীয় এবং আর্ন্তজাতিক বিভিন্ন সংস্থার সাথে লিয়াজো রক্ষা করা;

৩। বাণিজ্য ও শিল্প সংক্রান্ত বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সভায় বাংলাদেশের স্বার্থ সংরক্ষণ; অর্থনৈতিক নিরাপত্তা ও ঝুকি সম্পর্কে বিভিন্ন সভা, কর্মশালা এভং সিম্পোজিয়াম আয়োজন করা;

৪। সমন্বিত নীতিমালা প্রয়োগ বা যথাযথ প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ বা অন্যান্য আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের জন্য বিভিন্ন শুল্ক ভবন/শুল্ক স্টেশন বা অন্য কোন শুল্ক এলাকায় সংঘটিত অপরাধ বা বিচ্যুতি সংক্রান্ত গোপনীয় প্রতিবেদন প্রস্তুত করা;

এই কার্যক্রম সমূহ নিম্মবর্ণিত আইনের আওতায় সম্পন্ন করা হয়ঃ

 - দি কাস্টমস এ্যাক্ট, ১৯৬৯;

 - এলাইড এ্যাক্টস;

 - আর্মস এ্যাক্ট. ১৮৭৮;

 - এক্সপ্লোসিভ এ্যাক্টস, সাবস্ট্যান্স এ্যাক্টস, ১৯৮০;

 - আমদানি ও রপ্তানি (নিয়ন্ত্রণ) এ্যাক্টস, ১৯৫০

 - ক্রিমিনাল আইন (সংশোধিত) ১৯৫৮;

 - Agricultural Produce Cess act, 1940

 - Foreign Exchange Regulation Act, 1947

 - Wild Life Crime Prvention Act, 2012

 - Prevention of Money Laundering Act, 2012